খুলনার কয়রা উপজেলার মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সাতহালিয়া গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্র রেজওয়ান আহমেদ’র পাশে দঁাড়িয়েছেন জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন। গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজে চান্সপ্রাপ্ত রেজওয়ান আহমেদের ভর্তি কার্যক্রম ও বইপত্র ক্রয়ের জন্য সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করে ফাউন্ডেশনটি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির স্বাস্থ্য বিয়ষক সহ-সম্পাদক ডা: পারভেজ রেজা কাকন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান, সদস্য ডা: কে এম বাবর, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা: অমল চন্দ্র পাল, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সহ-সম্পাদক ডা: এম. আর. হাসান, ড্যাব এর বারডেম শাখার সভাপতি ডা: আমিরুল ইসলাম পাভেল প্রমুখ।
রেজওয়ান আহমেদ বলেন, আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি একজন ভালো চিকিৎসক হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে চাই। তার জন্য সমাজের সর্বস্তরের মানুষের দোয়ার অনুরোধ করেছেন।
রেজওয়ান আহমেদের পিতা ইব্রাহিম খলিল বলেন, ২০১৫ সালে হঠাৎ আমার হৃদরোগ ধরা পড়ে। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিয়েছি। এখন ধারদেনার মধ্যে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ছেলেটার মেডিকেলে ভর্তি আর পড়ালেখার খরচ বহন করার মতো সামর্থ্য ছিল না। এ বিষয়ে স্থানীয় এক সংবাদকর্মী পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০ হাজার টাকা দেন। আর আজ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন পড়াশুনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে বই কেনার টাকা দিয়েছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের আজীবন সদস্য ডা. এম.আর হাসান বলেন, পত্রিকার মাধ্যমে বিষয়টি দৃষ্টি গোচর হলে তার ব্যপারে খোঁজ খবর নেয়া হয়। পরবর্তীতে আমাদের সংগঠন তার পড়াশুনার দায়িত্ব নেন। অস্বচ্ছল পরিবারের স্বপ্ন পূরণে আমাদের সংগঠন প্রতি বছর তিন জন মেডিকেলের শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেন।
প্রসঙ্গত, গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে ভর্তি ফি জোগাড় সমস্যায় পড়েন রেজওয়ান আহমেদ। তাঁর পিতার নাম ইব্রাহিম খলিল স্থানীয় একটি মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী হিসেবে সল্প বেতনে চাকরি করেন এবং মা আছিয়া খাতুন গৃহিণী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে রেজওয়ান আহমেদ মেজ। ভাইবোনেরা স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছেন।
অভাব অনাটনের মধ্যে বেড়ে ওঠা রেজওয়ান কখনো থেমে থাকেন নি। অনেক না পাওয়ার মধ্যে বেড়ে উঠলেও তিনি শিক্ষাজীবনে প্রতিটি ধাপে সাফল্য পেয়েছেন। সাতহালিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিক্ষা জীবন শুরু। গিলাবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের আর্থিক সহায়তায় খুলনা সুন্দরবন কলেজে পড়াশুনা করে জিপিএ-৫ পেয়ে সাফল্য অর্জন করেন। মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রথমবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলেও হাল ছাড়েননি তিনি। এবার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কয়রা উপজেলা থেকে একমাত্র রেজওয়ান আহমেদ গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
খুলনা গেজেট/ টিএ